Quantcast
Channel: Answerglobe
Viewing all articles
Browse latest Browse all 778

বোধশক্তিহীন রোগীকে সাহায্য করবে ‘কম্পিউটার-মস্তিষ্ক’

$
0
0

একটি কম্পিউটার-ব্রেন বানানো হয়েছে। এর মাধ্যমে যে রোগীরা কথা বলতে পারেন না ও নড়াচড়া করতে পারেন না, তারা মনের ভাষা প্রকাশ করতে পারবেন। প্রতি মিনিটে দুটো শব্দের জানান দিতে পারবেন তারা। এমনটাই দাবি করেছেন নেদারল্যান্ডসের এক দল বিজ্ঞানী।

প্রক্রিয়াটি প্রয়োগ করা হয়েছে ৫৮ বছর বয়সী এক নারীর ওপর। তিনি অ্যামাইয়োট্রোপিক ল্যাটারাল স্ক্লেরোসিসের আক্রান্ত। তিনি তার পেশিগুলোকে নাড়াতে পারেন না। কথাও বলতে অক্ষম। ওই কম্পিউটার মস্তিস্কের মাধ্যমে তিনি অনুভব করে যে ডান হাত নাড়িয় কথা বলছেন। আর আগে কেবল চোখের ভঙ্গী ও পাতা ফেলার মাধ্যমেই ভাষা প্রকাশ করতেন তিনি।

প্রধান গবেষক ইউনিভার্সিটি অব মেডিক্যাল সেন্টার আটরিচট এর ব্রেন সেন্টারের রুডোফ ম্যাগনাস জানান, আমরা এমন এক পদ্ধতি তৈরি করেছি যার ওপর সম্পূর্ণ ভরসা রাখা যায়। এই স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার মতো কোনো ব্যবস্থা আর নেই।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর বিকাশ গিলজা জানান, এই সিস্টেমের মাধ্যমে রোগীকে দারুণ কোনো অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছে না। কিন্তু এটা দিয়ে বেশ ভালো কাজ হচ্ছে। অন্তত একে আরো আগে নিয়ে যাওয়ার শুরু হতে পারে এর মাধ্যমে।

মস্তিষ্কের মেশিন ইন্টারফেসের ক্ষেত্রে এটা একটা বড় আবিষ্কার। প্রতিস্থাপনযোগ্য ব্রেন মেশিন ইন্টারফেস গবেষণার ক্ষেত্র অনেক দূর নিয়ে যাবে গবেষণাটি, জানায় রয়টার্স হেলথ।

নতুন এ গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে সোসাইটি ফর নিউরোসায়েন্সের বার্ষিক সভায়।

গবেষণায় বলা হয়, মস্তিষ্কের সংকেত শনাক্ত করা খুব কঠিন বিষয়। কারণ মস্তিষ্কে অসংখ্য সংকেত সৃষ্টি হয়। নতুন পদ্ধতিতে চারটি সেন্সর স্ট্রিপ বসানো হয় মস্তিষ্কের বাম মোটর কর্টেক্সে। খুলিতে ড্রিলের মাধ্যমে চারটি ফুটো করে এই সার্জারি সম্পন্ন হয়। চারটি স্ট্রিপের প্রত্যেকটিতে রয়েছে চারটি ইলেকট্রোড। সেখান থেকে যে সংযোগগুলো এসেছে তা স্থাপন করা হয়েছে ওই নারীর বুকে। এ পদ্ধতি পরিচালিত হয় কম্পিউটারের মাধ্যমে। সার্জারি করতে সময় লেগেছে ৮ ঘণ্টা। টানা ২৮ সপ্তাহ ধরে তার ওপর গবেষণা চলে। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ওই নারী ভিডিও স্ক্রিনের কোনো অংশ স্পর্শের চেষ্টা করেন চিন্তার মাধ্যমে ডান হাতটি নাড়িয়ে। শব্দ বলার ক্ষেত্রে পর্দায় থাকা শব্দগুলো বাছাই করতে একই পদ্ধতিতে ক্লিক করার চেষ্টা করেন তিনি।

এসব কাজ সঠিকভাবে হতে নিখুঁত অ্যালগোরিদম তৈরিতে কয়েক মাস লেগে গেছে বিজ্ঞানীদের। দেখা গেছে, নির্দিষ্ট শব্দ বাছাই করতে ৫২ সেকেন্ড লেগে গেছে ওই নারীর। একবার শব্দ বাছাইয়ে অভ্যস্ত হওয়ার পর এ সময় ৩৩ সেকেন্ডে নেমে এসেছে।

রামসে বলেন, এখানে গতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। আসলে সিস্টেমটি কতটা কাজ করছে তাই গুরুত্বপূর্ণ। ওই নারী শব্দ বানান করে ঠিক করতে পেরেছেন কোনো ধরনের সহায়তা ছাড়াই। এটা একটা বড় পদক্ষেপ বলেই মনে করেন ইউনিভার্সিটি অব কানসাসের স্পিচ-ল্যাঙ্গুয়েজ-হিয়ারিং বিভাগের অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর জোনাথন ব্রুমবার্গ। এ যন্ত্রের সবচেয়ে সুবিধা হলো, বাড়ির বাইরেও রোগী এটি ব্যবহার করতে পারবেন।

তবে পদ্ধতিটিতে ঝুঁকি রয়েছে। কারণ এটা বসাতে সার্জারির প্রয়োজন পড়ে। হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে এবং সার্জারির পর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। সার্জারির পর জ্বর আসতে পারে যা চিকিৎসা ছাড়াই দ্রুত চলে যায়। ত্বকে অসাড় ভাব অনুভূত হতে পারে। ক্লান্তিভাবও আসতে পারে যা থেরাপি ছাড়াই চলে যায়।

পরবর্তিতে এই পদ্ধতি আরো কয়েকজন রোগীর ওপর প্রয়োগের কথা বলেন বিজ্ঞানীরা।

গিলজা বলেন, যন্ত্রটি এখনো গবেষণার মধ্যেই রয়েছে। এতে দেওয়া যেতে পারে ১০০ ইলেকট্রোড এবং একটি ৪ বর্গ মিলিমিটারের প্যাচ। মস্তিস্কের উপরিতলে না থেকে এগুলো মস্তিষ্কের টিস্যুতে দেওয়া যেতে পারে।

The post বোধশক্তিহীন রোগীকে সাহায্য করবে ‘কম্পিউটার-মস্তিষ্ক’ appeared first on Answerglobe.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 778

Trending Articles